প্রতিবন্ধী ভাতা মেলে না সময় মতো , ভিক্ষা করেই দিন চলে মালদার হরিশচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সুখদেব এর

1st March 2020 বর্ধমান
প্রতিবন্ধী ভাতা মেলে না সময় মতো , ভিক্ষা করেই দিন চলে মালদার হরিশচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সুখদেব এর


পেট চালাতে ভিক্ষা করা এক মাত্র ভরসা হয়ে ইঠেছে। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ছোট বেলা থেকে অন্ধ নাম সুখদেব।সুখদেব ছোট থেকে দু চোখে দেখতে পান না।পেট চালানোর জন্য দু বেলা খাবার জোটানোর জন্য ছোট থেকেই গ্রামে ভিক্ষে করে দিন কাটান সুখদেব । সরকারি তরফে করে দেওয়া হয় মাসে প্রতিবন্ধী ভাতা ১০০০ টাকা বরাদ্দ হলেও তা প্রতিমাসে  মেলে না ঠিকমতো। না চাইলেও পেট চালানোর জন্য  এখনো ভিক্ষার ঝুলি হাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ট্রেনে চেপে নানা জায়গায় ভিক্ষে করে বেড়াতে হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে যে কনো লোকাল ট্রেন গুলিতে ভিক্ষে করে বেড়ান অন্ধ সুখদেব। সঙ্গী তার  স্ত্রী উদাসী দাস। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সাহায্যের জন্য ঘুরেছেন সুখদেব বাবু। কিন্তু আশ্বাস মিলেছে পাইনি কোন সাহায্য। শেষ বয়সে এসেও ভিক্ষে করে দিন কাটাতে  হচ্ছে তাদের ।রয়েছে দুই ছেলে তারা আলাদা রয়েছে তাদের সংসার নিয়ে। বাবা-মাকে দেখেনা তাদের দুই ছেলে।থাকার মতো রয়েছে তাদের মাটির বাড়ি স্বামী স্ত্রী। ঘরের জন্য আবেদন করেছিলেন  কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি।
হতাশ সুখদেব বাবু জানালেন আগামী বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মালদায় আসছেন তিনি শুনেছেন। তাই তিনি ঠিক করেছেন সেদিন মালদায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার অভাব অভিযোগ জানাবেন। এ প্রসঙ্গে তার স্ত্রী উদাসী দাস জানালেন বিয়ের পর থেকেই তিনি তার অন্ধ স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে বেড়ান। হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়াও মালদার বিভিন্ন জায়গায়  ভিক্ষা করতে যান। এছাড়াও ট্রেনে ভিক্ষা করেন স্বামীর হাত ধরে। এ ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নেই। তাদের বাড়িটিও ভেঙে পড়ছে। স্বামী যে ভাতা পায় তাও নিয়মিত মেলেনা। ভিক্ষা করেই সংসার টানতে হচ্ছে। দুই ছেলে থাকলেও তারা তাদের সংসার নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। তারও বয়স হচ্ছে আগামী দিনে কিভাবে চলবে তিনি তা বুঝতে পারছেন না। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কাকলি দাস জানালেন আমি অনেকদিন থেকে দেখছি ওই স্বামী-স্ত্রী ভিক্ষা করেই তাদের দিন যাপন করেন। আমি চেষ্টা করব পঞ্চায়েতে তরফ থেকে এই বৃদ্ধ দম্পতির জন্য কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় কিনা। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনকে জানাবো।
হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিসবা খাতুন এর স্বামী আফজাল হোসেন জানালেন আমি এখনো অভিযোগ পাইনি। তবে প্রতিবন্ধী ভাতা তিনি কেন অনিয়মিত পাচ্ছেন আমি খতিয়ে দেখব। আর যদি তার কোন অভাব অভিযোগ থাকে সেটিও খতেয়ে দেখা হবে।

জেলা পরিষদের শিশু-নারী ও ত্রাণ কর্মদক্ষ মর্জিনা খাতুন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ভাতা মাসে ১০০০ টাকা করে পাওয়ার কথা। সেটা উনি নিয়মিত পারছেন কিনা সেটা আমি খোঁজ নেব এলাকার  হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানালেন উনি মানবিক ভাতা কত টাকা করে পাচ্ছেন সেটা খতিয়ে দেখা হবে। আর গীতাঞ্জলি প্রকল্পের ব্যাপারটি পঞ্চায়েত সমিতির উপর নির্ভর করে সেক্ষেত্রে আমি চেষ্টা করব যাতে এই সুবিধাটা করে দেওয়া যায় ।

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।